ফুলবাড়ীয়া প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলায় হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। লাঠি খেলায় নারী পুরুষের ঢল নামে। দীর্ঘদিন পর খেলা দেখা খেলোয়াড়দের সাথে আনন্দে মাতে।
উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের বিড়ালশাখ বুইধ্যার বাজারের পশ্চিম বাজারে শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ১০ টার দিকে এলাকাবাসী ঐতিহ্যের লাঠি খেলার আয়োজন করে। সকাল উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শক জড়ো থাকে। গ্রামের নারীরা আসে দলবেঁধে খেলা দেখতে।
বাঁশি ঢোল আর করতালের তালের লাঠি খেলার কৌশলী বাজনায় ডোলতে থাকে নারী পুরুষের শরীর। লাঠি খেলায় নবীন প্রবীনের সমন্বয়ে খেলা জমে উঠে।
খোলোয়াড়দের পরনে বাহারী পোশাক আর হাতে লাঠি। ঘুরছে শাঁই-শাঁই, পন-পন। ঢোলক, ঝুমঝুমি, কাড়া, করতাল ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্রের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে নাচ। লাঠি দিয়ে হয় সড়কি, ফড়ে, ডাকাত ডাকাত, বানুটি, বাওই জাক, নড়ি-বাড়িসহ নানা খেলা। খেলোয়াররা তাদের নিজ নিজ লাঠি দিয়ে রণকৌশল প্রদর্শন ও আত্মরক্ষা করে। ব্রিটিশ শাসনামলে অবিভক্ত বাংলার জমিদাররা তাদের নিরাপত্তার জন্য লাঠিয়ালদের নিযুক্ত করতেন। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে এই লাঠি খেলা। কেউ কেউ এ খেলা ছড়িয়ে দিচ্ছেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। লাঠি খেলা বিলুপ্তি হওয়ায় তৈরি হচ্ছে না কোন নতুন খেলোয়ার। বাংলার ঐতিহ্যবাহি খেলাটি টিকিয়ে রাখতে উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
দিনব্যাপী লাঠি খেলায় ৬০ জন লাঠি খেলোয়াড় তাদের শারীরিক কসরত প্রদর্শন করে বলে জানান লাঠি খেলার প্রধান খেলোয়াড় শামছুল হক সরকার। তিনি বলেন, খেলাটি হারিয়ে যাওয়ার পথে। আমরা নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড় তৈরি করেছি। যেন খেলাটা হারিয়ে না যায়। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে অন্তত খেলাটি হারিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে।
খেলোয়াড় আঃ মজিদ জানান, আমরা খেলাটি শিখেছি। এত দিন শেখানোর বা শিখিয়ে যাওয়ার লোক পাইনি।
নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড় তারেক (৩০) জানান, আমরা খেলাটি প্রবীনদের কাছ থেকে খেলাটি শিখেছি। আজকে খেলাটি খেলতে পারছি। সুযোগ পেলে নবীনদের খেলাটি শিখাতে পারবো। এভাবেই বেঁচে থাকবে।